প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'কয়েকজন এমপির বিতর্কিত ভূমিকায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লা এবং রাজশাহীর দু'জন এমপি মারধর করার ঘটনায় স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
-এ অবস্থায় কুমিল্লার সংশ্নিষ্ট এমপির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নালিশ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থগিত করা হয়েছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। রাজশাহীর সংশ্নিষ্ট এমপির বিরুদ্ধে উত্থাপিত ঘটনা এরই মধ্যে খতিয়ে দেখা হয়েছে। অভিযোগ পেলেই তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
'আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা ২৪খবরবিডিকে বলেছেন, কুমিল্লা-৪ আসনের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এবং রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছেন। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।'
-অবশ্য এ নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন আলোচিত দুই এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় এই দুই নেতা এ বিষয়ে কুমিল্লা এবং রাজশাহীর স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
-এই বৈঠকের পর জানতে চাইলে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, বৈঠকে আগামী ২১ জুলাই অনুষ্ঠেয় দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তিনি ওই দিন ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে আলোচিত এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হবে। এ ছাড়াও বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর তিন সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে।
-কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার বলেছেন, এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যকার বিরোধ নিরসন না হওয়া পর্যন্ত দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁদের বিরোধ নিরসনের পর সুবিধাজনক সময়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২১ জুলাইয়ের বৈঠকে দলের আলোচিত ওই দুই নেতার কাছে 'কী কারণে তাঁদের মধ্যে মারধর ও হাতাহাতির মতো অপ্রিয় ঘটনা ঘটেছে', তা জানতে চাওয়া হবে।
এমপিদের বিতর্কিত ভূমিকায় আ'লীগের তৃণমূলে ক্ষোভ-অসন্তোষ'
'অভিযোগ পেলেই শাস্তি কুমিল্লায় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যকার মারধরের আগে গত ৭ জুলাই গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পিটিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনার শিরোনাম হয়েছেন রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। ওই ঘটনার পর ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেছেন দলের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। রাজশাহীর স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে।'
-এস এম কামাল হোসেন ২৪খবরবিডিকে জানিয়েছেন, সংশ্নিষ্ট এমপির বিরুদ্ধে উত্থাপিত ঘটনা খতিয়ে দেখা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশদ খোঁজ-খবরও নেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেই আলোচিত এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন। এমপি তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর এখন পর্যন্ত উত্থাপিত ঘটনার বিষয়ে কেউ কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে এ নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা হবে। আর অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই এমপির বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
'এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেছেন, ওমর ফারুক চৌধুরীকে জড়িয়ে যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, সেটা তিনি সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছেন। তবে সত্য-অসত্য যাই ঘটুক না কেন, এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এক ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। আবার ওমর ফারুক চৌধুরীর কথিত মারধরের ঘটনা নিয়ে অডিও প্রকাশের বিষয়টিও সুখকর হয়নি। ওই অডিওটির তথ্য জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এটাও দলের জন্য কল্যাণকর কিছু হয়নি।'